কমল ও শরীফ বাদশাকে শোকজ

কক্সবাজার প্রতিনিধি :

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচারণায় আচরণবিধি লঙ্ঘন করায় কক্সবাজার–৩ (কক্সবাজার সদর–রামু–ঈদগাহ) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী সাইমুম সরওয়ার কমলকে আবারও শোকজ করা হয়েছে। একই সাথে শোকজ করা হয়েছে কক্সবাজার–২ (কুতুবদিয়া–মহেশখালী) আসনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম) মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী মোহাম্মদ শরীফ বাদশাকে।

কক্সবাজারের যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক মোছা. রেশমা খাতুন এবং সিনিয়র সহকারী জজ সুশান্ত প্রসাদ চাকমা দ্বিতীয়বারের মতো এই শোকজ করেন।

এর আগেও সংসদ সদস্য প্রার্থী সাইমুম সরওয়ার কমলকে আচরণবিধি লক্সঘনের অভিযোগে নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটি গত ২ ডিসেম্বর প্রথম দফায় শোকজ করেছিল।

শোকজ নোটিশে বলা হয়েছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কক্সবাজার–৩ (কক্সবাজার সদর–রামু–ঈদগাহ) আসনের রামু উপজেলার কাউয়ারখোপ ইউনিয়নের মনিরঝিলে গত ১৮ ডিসেম্বর রাত ৮টায় আওয়ামী লীগ থেকে মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী সাইমুম সরওয়ার কমলের উপস্থিতিতে তার নেতা–কর্মী, সমর্থকেরা মশাল মিছিল করেছেন। এছাড়া তিনি নেতা–কর্মী, সমর্থকদের নিয়ে নির্বাচনি আসনে যান্ত্রিক যানবাহন ব্যবহার করে শোডাউন করেছেন। যা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও অনলাইন নিউজ পোর্টালে ভিডিও ফুটেজ প্রচারিত হয়েছে। যা সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা, ২০০৮’ এর ৮(ক) বিধিতে বর্ণিত বিধানের লক্সঘন।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সাইমুম সরওয়ার কমলের কোনো বক্তব্য থাকলে তা আজ রোববার সকাল ১০টার মধ্যে নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান তথা কক্সবাজারের যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিজ্ঞ বিচারক মোছা. রেশমা খাতুনের কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে বা উপযুক্ত কোনো প্রতিনিধির মাধ্যমে লিখিতভাবে ব্যাখ্যা প্রদান করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

অপরদিকে কক্সবাজার–২ (কুতুবদিয়া–মহেশখালী) আসনে বিএনএম মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী মোহাম্মদ শরীফ বাদশা গত বুধবার রাত ৯টা ৫৫ মিনিটে মহেশখালীর শাপলাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও নির্বাচনে অপর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আশেক উল্লাহ রফিকের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ওসমান সরওয়ারকে নিজ মোবাইল ফোন থেকে কল করে অকথ্য ও অশ্লীল ভাষায় গালমন্দ এবং হুমকি প্রদান করেন। একইদিন রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে অনুরূপভাবে মোহাম্মদ শরীফ বাদশার সমর্থক ও মহেশখালী উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি সিরাজুল মোস্তফা বাঁশি তার মোবাইল ফোন থেকে কল করে শাপলাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও আশেক উল্লাহ রফিকের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক জসিম উদ্দিন মাহমুদকে অকথ্য ও অশ্লীল ভাষায় গালমন্দ এবং হুমকি প্রদান করেন।

এই দুটি ঘটনার বিষয়ে কক্সবাজার–২ আসনের নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যানের কাছে পৃথক দুটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

শোকজ নোটিশে আরো বলা হয়, এ ধরনের কাজ ‘সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা, ২০০৮’ এর ১১(ক) বিধির বর্ণিত বিধান এবং গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২ এর ৭৭ অনুচ্ছেদে বর্ণিত বিধান লক্সঘন করছেন মর্মে প্রতীয়মান হয়। এ অবস্থায় নির্বাচনি আচরণ বিধি–বিধান ভঙ্গের দায়ে মোহাম্মদ শরীফ বাদশার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে কেন সুপারিশ করা হবে না, তা আগামীকাল সোমবার বিকেল ৪টার মধ্যে নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান তথা কক্সবাজারের সিনিয়র সহকারী জজ সুশান্ত প্রসাদ চাকমার কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে কিংবা উপযুক্ত কোনো প্রতিনিধির মাধ্যমে লিখিতভাবে ব্যাখ্যা প্রদান করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।